আলাদা আলাদা habitats এ আলাদা আলাদা রকমের জীব পাওয়া যায়। যারা সেই কন্ডিশনে বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত। যেমন- মরুভূমিতে উট এবং সমুদ্রে মাছ থাকে।
কি কি বিষয় মরুভূমিতে উটকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে?
মরুভূমিতে দিনে প্রচণ্ড গরম পরে আর রাতে খুবই ঠাণ্ডা পড়ে এবং মরুভূমিতে জল খুবই অল্প মাত্রায় উপস্থিত। মরুভূমির গরম বালি থেকে বাঁচার জন্য উটের পা অনেক লম্বা হয়। উট খুব কম মূত্র ত্যাগ করে, উটের মল ও একদম শুকনো হয় এবং উটের দেহে ঘাম ও হয় না। এইভাবে উট নিজের দেহের থেকে খুব কম মাত্রায় জল পরিত্যাগ করে বহুদিন পর্যন্ত মরুভূমিতে জল ছাড়া থাকতে পারে।
কি কি বিষয়ে মাছকে জলে থাকতে সাহায্য করে?
মাছের দেহ স্ট্রিমলাইন সেপের, তাদের গায়ে পিচ্ছিল আশ থাকে যা তাদের জলজ পরিবেশে থাকতে সাহায্য করে। তাদের লেজ ও পাখনা যথাক্রমে সাঁতার কাটতে এবং দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাদের ফুলকা (gill) জল থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করতে সাহায্য করে।
অভিযোজন (Adaptation)- যে সমস্ত প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য কোন একটি জীবকে তার বসতি স্থলে (habitats) বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। সেই বৈশিষ্ট্য গুলিকে অভিযোজন বা এডাপটেশন বলে।
অভিযোজনের হাজার হাজার বছর সময় লাগে।
কিন্তু কিছু কিছু পরিবর্তন খুব কম সময়ের মধ্যে হয়, জীবদের সাহায্য করার জন্য। যেমন যদি আমরা সমতলের বাসিন্দা হই তবে প্রথম প্রথম পাহাড়ে গেলে আমাদের শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, কিন্তু কিছুদিন পাহাড়ে থাকতে থাকতে আমাদের শরীর ওই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়। এমন পরিবর্তনকে আবহাওয়া অভ্যস্থকরন (acclimatization) বলে।
যেখানে জীবেরা বসবাস করে সেই স্থানটিকে ওই জীবদের বসতি বা হ্যাবিটেট বলে।
হ্যাবিটেট দুই রকমের হয় টেরিস্ট্রিয়াল হ্যাবিটেট এবং অ্যাকোয়াটিক হ্যাবিটেট।
কোন একটি হ্যাবিটেট দুটি উপাদান দিয়ে তৈরি জৈবিক ও অজৈবিক। কোন হ্যাবিটেট এ যে সমস্ত উদ্ভিদ ও প্রাণী থাকে সেটা হলো ওই হ্যাবিটেট এর জৈবিক উপাদান এবং পাথর, মাটি, জল, বায়ু প্রভৃতি এগুলি হল ওই হ্যাবিটেট এর অজৈবিক উপাদান।
(কোন বীজ থেকে উদ্ভিদ উৎপন্ন হওয়ার পদ্ধতিকে অঙ্কুরিত (germinated) হওয়া বলে।)
জীবনের উৎপত্তি বৃদ্ধি ও বিকাশে হ্যাবিটেট এর অজৈবিক উপাদানের একটা বড় ভূমিকা আছে। কিছু বীজের অঙ্কুরোদগমের পরীক্ষার মাধ্যমে এটা বোঝা যায়, কিছু ছোলাকে অঙ্কুরিত করার জন্য খুব ঠাণ্ডা বা অন্ধকার স্থানে রাখলে এবং কিছু ছোলাকে সাধারণ অবস্থায় রাখলে সেখান থেকে উদ্ভিদ তৈরি হতে আলাদা আলাদা সময় লাগে।
যে সমস্ত জীব তাদের বসতির অজৈব পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না, তারা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়।
বিভিন্ন পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য সেখানকার উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহে যে সমস্ত অভিযোজন দেখা যায়-
মরুভূমি- মরুভূমিতে দিনের তাপমাত্রা খুব বেশি থাকায় অনেক জীব যেমন ইঁদুর সাপ দিনের বেলা মাটির নিচে থাকে আর রাতে তাপমাত্রা কমলে বেরিয়ে আসে।
মরুভূমির উদ্ভিদের পাতা থাকে না, বা থাকলেও খুব কম, ছোট হয় বা সেগুলি কাটার আকারে থাকে। এরকম অভিযোজন উদ্ভিদ গুলির বাষ্পমোচন এর হারকে কমায়। এতে তারা মরুভূমির রুক্ষ পরিবেশে জল ধরে রাখতে পারে। এছাড়া উদ্ভিদের মূল গুলি মাটির অনেক নিচ পর্যন্ত যায় জল শোষণ করার জন্য।
পর্বত- পর্বতের উচ্চতা অনেক বেশি হওয়ায় সেখানে শীতকালে বরফ পড়ে, এই বরফ ও বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য পার্বত্য অঞ্চলের উদ্ভিদ গুলি শঙ্কু আকৃতির হয়। এদের ডালপালা গুলিতে স্লোপ থাকে এবং পাতা সূচের মত হয়। এতে বরফ পাতায় জমা হয় না।
পার্বত্য অঞ্চলের প্রাণীদের দেহে পুরু চামড়া ও ঘন লোম থাকে, snow leopard এর পায়ের পাতায় ও লোম থাকে। পার্বত্য অঞ্চলের ছাগলদের খুড় খুব শক্ত হয়, খাড়া পাহাড়ে ওপরের দিকে ওঠার জন্য।
তৃণভূমি- হরিণ এবং সিংহ দুটি প্রাণী তৃণভূমিতে থাকে। সিংহের গায়ের রং হালকা বাদামি তৃণভূমিতে লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করে এবং তাদের চোখ সামনের দিকে থাকে যেটা সিংহকে তার শিকারের (Prey) ঠিক অবস্থান বুঝতে সাহায্য করে।
অপরদিকে হরিণের কান অনেক বড় হয়, যেটা হালকা শব্দকে ও শুনে নেয়। হরিণের চোখ দুটি মুখের দুই পাশে থাকে, যেটা হরিণকে চারিদিকে দেখতে সাহায্য করে যাতে তারা শিকারি (Predator) জন্তুর খাদ্য হওয়া থেকে বাঁচতে পারে। তাদের দ্রুত গতি ও এই কাজে সাহায্য করে।
সমুদ্র- সমুদ্রের বেশিরভাগ প্রাণীর দেহে ফুলকা থাকে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন গ্রহণ করাার জন্য। তবে কিছু প্রাণী আছে যেমন ডলফিন ও তিমি যাদের দেহে ফুলকা থাকে না শ্বাস নেওয়ার জন্যয এরা জলের বাইরে এসে নাসিকা ছিদ্র (blowhole) দিয়ে শ্বাস গ্রহণ করে।
পুকুর এবং হ্রদ- জলাশয় তিন রকমের উদ্ভিদ দেখা যায়।
- কিছু উদ্ভিদের মূল জলের নিচে মাটিতে থাকে, কান্ড জলের ভেতরে থাকে এবং পাতা ও ফুল জলের উপরে থাকে।
- কিছু উদ্ভিদের মূল জলের নিচে মাটিতে থাকে না, মূল জলের নীচে ভাসমান অবস্থায় থাকে এবং কান্ড, পাতা ও ফুল জলের উপরে থাকে।
- কিছু উদ্ভিদ আছে এগুলি সম্পূর্ণভাবেই জলের নিচে থাকে। এদের পাতাগুলি ফিতের মত হয় এতে জল সহজেই উদ্ভিদের ক্ষতি না করে প্রবাহিত হতে পারে।
জলজ উদ্ভিদের মূলের প্রধান কাজ উদ্ভিদ গুলিকে সঠিক স্থানে ধরে রাখা।
ব্যাঙ একটি উভচর প্রাণী যাকে জলে ও স্থলে দুই জায়গাতেই পাওয়া যায়। ব্যাঙের পেছনের পা গুলিতে শক্তিশালী পেশী থাকে যা তাদের স্থলে লাফাতে সাহায্য করে, তেমনি তাদের পায়ের আঙ্গুলের মাঝে পর্দা তাদের জলে সাঁতার কাটতে সাহায্য করে।
সজীব পদার্থের বৈশিষ্ট্য-
- সমস্ত সজীব পদার্থের খাদ্যের দরকার।
- প্রতিটি সজীব পদার্থের বৃদ্ধি হয়।
- প্রতিটি সজীব পদার্থের দেহের শ্বসন কার্য চলে। (কেঁচোর শ্বাস অঙ্গ ত্বক। মাছের শ্বাস অঙ্গ ফুলকা) (উদ্ভিদরা রাতে শ্বাসকার্য চালায়)
- সমস্ত সজীব পদার্থ উত্তেজনায় সাড়া দেয়।
- সমস্ত সজীব পদার্থ রেশন কার্য চালায়।
- সমস্ত সজীব পদার্থ বংশবিস্তার করে।
- সমস্ত সজীব পদার্থ চলন ক্রিয়ায় অংশ নেয়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন