সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস গঠন এবং নরমপন্থীদের যুগ

সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু এবং এও হিউম এর প্রচেষ্টায় 1885 খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস গঠিত হয়। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন হয় বোম্বের গোকুলদাস তেজপাল সংস্কৃত কলেজে যার সভাপতিত্ব করেন উমেশচন্দ্র ব্যানার্জি
জাতীয় কংগ্রেসের উদ্দেশ্য এবং কর্মসূচি-
  • একটি সর্বভারতীয় জাতীয় আন্দোলন গঠন করা।
  • ভারতবাসীদের রাজনৈতিকভাবে শিক্ষিত করা।
  • সর্বভারতীয় গণআন্দোলনের জন্য একটি মুখ্য কার্যালয় স্থাপন করা।
  • ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের দেশ ভক্তির মধ্যে ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং সৌজন্যে স্থাপন করা।
  • সরকারের সামনে জনপ্রিয় দাবিগুলোকে তুলে ধরা।
  • দেশাত্মবোধ জাগানো।

নরমপন্থী দের যুগ (1885-1905)

জাতীয় কংগ্রেসের নরমপন্থী নেতাদের ব্রিটিশ সরকারকে কিছু জানাতে হলে প্রিয়ার এবং পিটিশনের সাহায্য নিতেন এবং কনস্টিটিউশনাল রিফর্ম দাবি জানাতেন। তারা সরাসরি কোনো গণ আন্দোলনের পথে অগ্রসর হতে না।
এই সময়কার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নরমপন্থী নেতার নাম হল- দাদাভাই নওরোজি, ফিরোজশাহ মেহেতা, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, উমেশচন্দ্র ব্যানার্জি ইত্যাদি।

ভারতীয় জাতীয়তার নরমপন্থীদের অবদান-

  • নরমপন্থী ও ব্রিটিশ সরকারের অর্থনৈতিক নীতি গুলির সমালোচনা করতেন যার ফলে দেশের সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে ব্রিটিশ শাসন ভারতীয়দের পক্ষে ভালো নয়। দাদাভাই নওরোজি তার drain theory দ্বারা এটা বোঝানোর চেষ্টা করেন কিভাবে ব্রিটিশ সরকার ভারতের সম্পদ ব্রিটেনে নিয়ে যাচ্ছে। দাদাভাই নওরোজি বিখ্যাত বই POVERTY AND UNBRITISH RULE IN INDIA.
  • 1861 খ্রিস্টাব্দের Indian council act এ যে সমস্ত ভারতীয়দের ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ বডিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় তারা সকলেই ছিলেন নমিনেটেড মেম্বার। নরমপন্থীরা ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ বডিতে নির্বাচিত সদস্যদের আনার দাবি জানায় এবং এই লেজিসলেটিভ বডিতে ভারতীয়দের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি ও জানায়।
  • ইমপেরিয়াল লেজিসলেটিভ বডির ভারতীয় সদস্যদের ক্ষমতা বৃদ্ধির দাবি জানানো হয় নরমপন্থী দের দ্বারা। যেখানে ভারতীয়দের বাজেটে ভোটদানের অধিকার চাওয়া হয়।
  • জুডিশিয়াল বডিকে এক্সিকিউটিভ বাড়ি থেকে আলাদা করার দাবি জানানো হয়।
  • নরমপন্থী ও ব্রিটিশদের এগ্রেসিভ ফরেন পলিসি নিয়েও সমালোচনা করে।
  • ওয়েলফেয়ার সেক্টর যেমন-স্বাস্থ্য, শিক্ষা এই সমস্ত খাতে অধিক পরিমাণে অর্থ বিনিয়োগের দাবি জানানো হয় ব্রিটিশ সরকারের কাছে নরমপন্থী দের দ্বারা।

নরমপন্থী দের সীমাবদ্ধতা-



  • নরমপন্থী কেবলমাত্র ভারতের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তারা কোনদিনই ভারতের সাধারণ মানুষকে সম্পূর্ণভাবে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে আনতে পারেননি। 
  • নরমপন্থী নেতাদের দাবি সাংবিধানিক পথে আদায় করার চেষ্টা করেছেন তারা কোনদিনই কোন গণআন্দোলনের দিকে অগ্রসর হননি।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Fundamental right in Bengali | মৌলিক অধিকার

Fundamental right বা মৌলিক অধিকার ভারতীয় সংবিধানের part 3 এর article 12 থেকে article 35 এর মধ্যে আছে। মৌলিক অধিকারের ধারণা US Constitution থেকে নেওয়া হয়েছে।  ভারতীয় সংবিধানে বর্তমানে ছয়টি মৌলিক অধিকার আছে। যে গুলি হল, Right to Equality বা সাম্যের অধিকার (article 14 থেকে 18) Right to freedom বাক স্বাধীনতার অধিকার (article 19 থেকে 22) Right against exploitation বা শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার (article 23 থেকে 24) Right to freedom of religion বা ধর্মীয় স্বাধীনতা (article 25 থেকে 28) Cultural and educational rights বা শিক্ষা ও সংস্কৃতির অধিকার (article 29 থেকে 30) Right to constitutional remedies বা সাংবিধানিক প্রতিকারের অধিকার (article 32) 1978 খ্রিস্টাব্দের আগে right to property বা সম্পত্তির অধিকার ও একটি fundamental right বা মৌলিক অধিকার ছিল কিন্তু 1978 সালে 44 তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সম্পত্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার থেকে সরিয়ে legal right বানানো হয় যা বর্তমানে article 300A যে আছে। Right to Equality বা সাম্যের অধিকার (article 14 থেকে 18) -  Article 14 -  Equal

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান

গান্ধীজীর উত্থান ব্রিটেন থেকে ওকালতি পড়ে এসে গান্ধীজী 1898 সালে সাউথ আফ্রিকাতে যান। সেখানে তিনি দাদা আব্দুল্লাহর কেসের জন্য গেলেও সেখানকার নিপীড়িত ভারতীয়দের দেখে তাদের সাহায্য করার জন্য 22 বছর সাউথ আফ্রিকা তে থাকেন। এরমধ্যে গান্ধীজীর প্রতিবাদের দুটি ধারা দেখা যায়। গান্ধীজীর প্রতিবাদের নরমপন্থী ভাগ (1894-1906) দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে গান্ধীজী প্রথমে নরমপন্থী দের মত সরকারকে প্রেয়ার এবং পিটিশন দেওয়া শুরু করে এই আশায় যে যেহেতু আফ্রিকা ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ সেই হিসাবে সেখানকার বসবাসকারী ভারতীয়রা ব্রিটেনের নাগরিক এবং ব্রিটিশ সরকার তাদের দুর্দশা দেখলে তাদের সাহায্য করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।  প্যাসিভ রেজিস্টেন্স বা সত্যাগ্রহী ভাগ (1906-1914) নরমপন্থী ভাবধারায় কাজ না হওয়ায় গান্ধীজি প্যাসিভ রেজিস্টেন্স এর দিকে চলে যায় যাকে তিনি সত্যাগ্রহ বলেন। তিনি প্রথম সত্যাগ্রহ করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা ভারতীয়দের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নিয়ে। এখানে ব্রিটিশ সরকার দ্বারা বলা হয়েছিল যে সমস্ত ভারতীয়রা দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকে তাদেরকে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া একটি কার্ড নিয়ে ঘুরতে হব

ধ্বনি

ধ্বনি কাকে বলে? বাক যন্ত্রের স্বল্পতম প্রয়োগে শব্দের বিশ্লিষ্ট তম অংশকে বলে ধ্বনি। বাংলা ব্যাকরণে 11 টি স্বরধ্বনি এবং 39 টি ব্যঞ্জনধ্বনি আছে। ধ্বনি পরিবর্তন দুইভবে হয়, স্বরধ্বনি ঘটিত পরিবর্তন ও ব্যঞ্জনধ্বনি ঘটিত পরিবর্তন। স্বরধ্বনিঘটিত পরিবর্তন- স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ-  উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা ছন্দের প্রয়োজনে সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ্ণকে  ভেঙে তার মধ্যে স্বরধ্বনি আনার রীতিকে বলা হয় স্বরভক্তি বাা বিপ্রকর্ষ। যেমন - রত্ন > রতন স্বরাগম- উচ্চারণ কে সহজ করতে অথবা উচ্চারণের অপারগতার জন্য শব্দের শুরুতে, মধ্যে বা শেষে স্বরধ্বনি আগমনকে বলা হয় স্বরাগম। স্বরাগমকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। আদি স্বরাগম- শব্দের শুরুতে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- স্কুল > ইস্কুল মধ্য স্বরাগম-  শব্দের মধ্যে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- রত্ন > রতন, ধর্ম > ধরম ইত্যাদি। অন্ত স্বরাগম-  শব্দের শেষে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- বেঞ্চ >বেঞ্চি, ইঞ্চ>ইঞ্চি ইত্যাদি। স্বরলোপ-  উচ্চারণের কোন ত্রুটি বা সুবিধার জন্য শব্দের অন্তর্গত কোন