সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Stone age in Bengali | প্রস্তর যুগ

প্রস্তর যুগে পাথরের আকার এবং ওজন এর হিসাবে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
  1. প্রাচীন প্রস্তর যুগ বা প্যালিওলিথিক এজ (৮০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত)
  2. মধ্য প্রস্তর যুগ বা mesolithic age ( ৮০০০ থেকে ৪০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত)
  3. নব্য প্রস্তর যুগ বা neolithic age ( ৪০০০ থেকে ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত)

প্রাচীন প্রস্তর যুগ:
এই সময় মানুষ প্রথমবারের জন্য দুই রকম বস্তুকে আলাদা করতে শেখে ধরার ভিত্তিতে। 
  1. Gripping object- যে সমস্ত বস্তুকে ধরা যায় তাদেরকে বলা হতো gripping objectযেমন- গাছপালা, পাথর, বন্য পশু ইত্যাদি।
  2. Non gripping object- যে সমস্ত বস্তুকে ধরা যায় না তাদেরকে প্রাচীন মানুষেরা Non gripping object এর পর্যায় ফেলেছিলে। যেমন- আলো, বাতাস, জল, আগুন ও শব্দ।
এই যুগের মানুষের সব থেকে বড় আবিষ্কার ছিল আগুন, তবে তারা এই যুগে মানে প্রাচীন প্রস্তর যুগে আগুনকে শুধুমাত্র খুঁজে পেয়েছিলেন কিন্তু এর ব্যবহার করতে শেখেন নি।


প্রাচীন প্রস্তর যুগ ছিল একটি খাদ্য সংগ্রহকারী যুগ এই সময় মানুষ শিকার করে নিজেদের জীবন যাপন করতেন। আর শিকারের জন্য তারা পাথরের ব্যবহার করতেন।

প্রাচীন প্রস্তর যুগের হাতিয়ার এর বৈশিষ্ট্য-
যেমনটা আমরা একটু আগেই জেনেছি এই সময় হাতিয়ার বলতেছিল পাথর, তো পাথর এর বৈশিষ্ট্য গুলো আমরা এক এক করে দেখে নিচ্ছি,
  1. এই সময়কার পাথরগুলি কোন নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন ছিল না।
  2. পাথরগুলি আকারে অনেক বড় ছিল।
  3. ওজন অনেক বেশি ছিল।
  4. এই পাথরগুলি পালিশ করা ছিল না বলে এদের ধার ও কম ছিল।
এরকম হাতিয়ার দিয়ে শিকার করার সময় প্রাচীন মানুষদের অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হতো। যেমন-
  1. পাথর গুলিকে ধরতে অসুবিধে হতো।
  2. তাদের ছুড়তে অসুবিধা হতো।
  3. এবং পাথরগুলি কে বহন করে নিয়ে যেতে অসুবিধা হতো।
প্রাচীন প্রস্তর যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল ব্রাহ্মণী।

মধ্য প্রস্তর যুগ:
প্রাচীন প্রস্তর যুগের হাতিয়ার এই সমস্যাগুলি জন্যই পরবর্তীকালে পাথরের আকারকে আরো কিছুটা ছোট করে দেওয়া হয়। আর সেই সময় থেকেই মধ্য প্রস্তর যুগ শুরু হয়। মধ্য প্রস্তর যুগকে ক্ষুদ্র প্রস্তর সংস্কৃতি ও বলা হয়।
মধ্য প্রস্তর যুগের হাতিয়ার এর বৈশিষ্ট্য:
  1. মধ্য প্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার গুলিও প্রাচীন প্রস্তর যুগের মতনই নির্দিষ্ট আকার ও আয়তনহীন ছিল।
  2. তবে এই পাথরগুলি ছোট ছিল।
  3. আর ছোট হওয়ার কারণে এদের ওজন অনেক কম ছিল।
  4. তবে এই পাথরগুলিকেও পালিশ করা হতো না বলে এদের ধার কম ছিল।
মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষেরা কুকুর কে প্রথম পোষ মানায় এবং তাদের দ্বিতীয় গৃহপালিত পশু হল ভেড়া।
এই সময়কার মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল পশুচারণ করা।
মধ্য প্রস্তর যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল বীরভানপুর যেটি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত

নব্য প্রস্তর যুগ
নব্য প্রস্তর যুগে মানুষ শিকার করা ছেড়ে কৃষিকাজ শুরু করে। এই যুগের মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ ও পশুপালন এবং তার আজ এই শো টি সবার প্রথম উৎপাদন করে সেটি হলো রাগী বা মিলেট।
নব্য প্রস্তর যুগেরের হাতিয়ার এর বৈশিষ্ট্য:
  1. এই যুগের হাতিয়ার এই নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন ছিল।
  2. এগুলি ছোট ছিল।
  3. ওজনে অনেক হালকা ছিল।
  4. এগুলোকে পালিশ করা হয়েছিল বলে এদের ধরা অনেক বেশি ছিল।
মানুষ সবার প্রথম প্রাচীন প্রস্তর যুগে আগুনকে খুঁজে পেলেও তারা আগুনের ব্যবহার শুরু করে নব্য প্রস্তর যুগে। 
এই যুগের আর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বস্তু হলো কুমোরের চাকা। ঐতিহাসিক রায় যখন নব্য প্রস্তর যুগে কুমোরের চাকা সন্ধান পান তা থেকে তারা অনুমান করেন এই সময়কার মানুষ মাটির পাত্র ব্যবহার করতে শেখে। আর পরবর্তীকালে এই সময় কাজে সমস্ত মাটির পাত্র পাওয়া গেছে সেগুলি ছিলো পোড়ামাটির আর সাধারণত এই পাত্র গুলি দুটি রঙের হতো লাল এবং কালো। যে সমস্ত মাটির পাত্র গুলিকে আগুনে কম পড়ানো হতো তাদের রং হতো লাল এবং যে সমস্ত মাটির পাত্র গুলিকে বেশিক্ষণ ধরে আগুনে পোড়ানো হতো তাদের রং কালো।


নব্য প্রস্তর যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল লঙ্ঘানাজ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Fundamental right in Bengali | মৌলিক অধিকার

Fundamental right বা মৌলিক অধিকার ভারতীয় সংবিধানের part 3 এর article 12 থেকে article 35 এর মধ্যে আছে। মৌলিক অধিকারের ধারণা US Constitution থেকে নেওয়া হয়েছে।  ভারতীয় সংবিধানে বর্তমানে ছয়টি মৌলিক অধিকার আছে। যে গুলি হল, Right to Equality বা সাম্যের অধিকার (article 14 থেকে 18) Right to freedom বাক স্বাধীনতার অধিকার (article 19 থেকে 22) Right against exploitation বা শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার (article 23 থেকে 24) Right to freedom of religion বা ধর্মীয় স্বাধীনতা (article 25 থেকে 28) Cultural and educational rights বা শিক্ষা ও সংস্কৃতির অধিকার (article 29 থেকে 30) Right to constitutional remedies বা সাংবিধানিক প্রতিকারের অধিকার (article 32) 1978 খ্রিস্টাব্দের আগে right to property বা সম্পত্তির অধিকার ও একটি fundamental right বা মৌলিক অধিকার ছিল কিন্তু 1978 সালে 44 তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সম্পত্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার থেকে সরিয়ে legal right বানানো হয় যা বর্তমানে article 300A যে আছে। Right to Equality বা সাম্যের অধিকার (article 14 থেকে 18) -  Article 14 -  Equal

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান

গান্ধীজীর উত্থান ব্রিটেন থেকে ওকালতি পড়ে এসে গান্ধীজী 1898 সালে সাউথ আফ্রিকাতে যান। সেখানে তিনি দাদা আব্দুল্লাহর কেসের জন্য গেলেও সেখানকার নিপীড়িত ভারতীয়দের দেখে তাদের সাহায্য করার জন্য 22 বছর সাউথ আফ্রিকা তে থাকেন। এরমধ্যে গান্ধীজীর প্রতিবাদের দুটি ধারা দেখা যায়। গান্ধীজীর প্রতিবাদের নরমপন্থী ভাগ (1894-1906) দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে গান্ধীজী প্রথমে নরমপন্থী দের মত সরকারকে প্রেয়ার এবং পিটিশন দেওয়া শুরু করে এই আশায় যে যেহেতু আফ্রিকা ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ সেই হিসাবে সেখানকার বসবাসকারী ভারতীয়রা ব্রিটেনের নাগরিক এবং ব্রিটিশ সরকার তাদের দুর্দশা দেখলে তাদের সাহায্য করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।  প্যাসিভ রেজিস্টেন্স বা সত্যাগ্রহী ভাগ (1906-1914) নরমপন্থী ভাবধারায় কাজ না হওয়ায় গান্ধীজি প্যাসিভ রেজিস্টেন্স এর দিকে চলে যায় যাকে তিনি সত্যাগ্রহ বলেন। তিনি প্রথম সত্যাগ্রহ করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা ভারতীয়দের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নিয়ে। এখানে ব্রিটিশ সরকার দ্বারা বলা হয়েছিল যে সমস্ত ভারতীয়রা দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকে তাদেরকে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া একটি কার্ড নিয়ে ঘুরতে হব

ধ্বনি

ধ্বনি কাকে বলে? বাক যন্ত্রের স্বল্পতম প্রয়োগে শব্দের বিশ্লিষ্ট তম অংশকে বলে ধ্বনি। বাংলা ব্যাকরণে 11 টি স্বরধ্বনি এবং 39 টি ব্যঞ্জনধ্বনি আছে। ধ্বনি পরিবর্তন দুইভবে হয়, স্বরধ্বনি ঘটিত পরিবর্তন ও ব্যঞ্জনধ্বনি ঘটিত পরিবর্তন। স্বরধ্বনিঘটিত পরিবর্তন- স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ-  উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা ছন্দের প্রয়োজনে সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ্ণকে  ভেঙে তার মধ্যে স্বরধ্বনি আনার রীতিকে বলা হয় স্বরভক্তি বাা বিপ্রকর্ষ। যেমন - রত্ন > রতন স্বরাগম- উচ্চারণ কে সহজ করতে অথবা উচ্চারণের অপারগতার জন্য শব্দের শুরুতে, মধ্যে বা শেষে স্বরধ্বনি আগমনকে বলা হয় স্বরাগম। স্বরাগমকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। আদি স্বরাগম- শব্দের শুরুতে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- স্কুল > ইস্কুল মধ্য স্বরাগম-  শব্দের মধ্যে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- রত্ন > রতন, ধর্ম > ধরম ইত্যাদি। অন্ত স্বরাগম-  শব্দের শেষে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- বেঞ্চ >বেঞ্চি, ইঞ্চ>ইঞ্চি ইত্যাদি। স্বরলোপ-  উচ্চারণের কোন ত্রুটি বা সুবিধার জন্য শব্দের অন্তর্গত কোন