প্রস্তর যুগে পাথরের আকার এবং ওজন এর হিসাবে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
- প্রাচীন প্রস্তর যুগ বা প্যালিওলিথিক এজ (৮০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত)
- মধ্য প্রস্তর যুগ বা mesolithic age ( ৮০০০ থেকে ৪০০০
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত)
- নব্য প্রস্তর যুগ বা neolithic age ( ৪০০০ থেকে ২৫০০
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত)
প্রাচীন প্রস্তর যুগ:
এই সময় মানুষ প্রথমবারের জন্য দুই রকম বস্তুকে আলাদা করতে শেখে ধরার
ভিত্তিতে।
- Gripping
object- যে সমস্ত বস্তুকে ধরা যায় তাদেরকে বলা হতো gripping
object। যেমন- গাছপালা, পাথর, বন্য পশু ইত্যাদি।
- Non
gripping object- যে সমস্ত বস্তুকে ধরা যায় না তাদেরকে প্রাচীন
মানুষেরা Non gripping object এর পর্যায়
ফেলেছিলে। যেমন- আলো, বাতাস, জল, আগুন ও শব্দ।
এই যুগের মানুষের সব থেকে বড় আবিষ্কার ছিল আগুন, তবে তারা এই যুগে মানে প্রাচীন প্রস্তর যুগে আগুনকে শুধুমাত্র খুঁজে
পেয়েছিলেন কিন্তু এর ব্যবহার করতে শেখেন নি।
প্রাচীন প্রস্তর যুগ ছিল একটি খাদ্য সংগ্রহকারী যুগ এই সময় মানুষ শিকার করে
নিজেদের জীবন যাপন করতেন। আর শিকারের জন্য তারা পাথরের ব্যবহার করতেন।
প্রাচীন প্রস্তর যুগের হাতিয়ার এর বৈশিষ্ট্য-
যেমনটা আমরা একটু আগেই জেনেছি এই সময় হাতিয়ার বলতেছিল পাথর, তো পাথর এর বৈশিষ্ট্য গুলো আমরা এক এক করে দেখে নিচ্ছি,
- এই সময়কার পাথরগুলি কোন নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন ছিল না।
- পাথরগুলি আকারে অনেক বড় ছিল।
- ওজন অনেক বেশি ছিল।
- এই পাথরগুলি পালিশ করা ছিল না বলে এদের ধার ও কম ছিল।
এরকম হাতিয়ার দিয়ে শিকার করার সময় প্রাচীন মানুষদের অনেক অসুবিধার সম্মুখীন
হতে হতো। যেমন-
- পাথর গুলিকে ধরতে অসুবিধে হতো।
- তাদের ছুড়তে অসুবিধা হতো।
- এবং পাথরগুলি কে বহন করে নিয়ে যেতে অসুবিধা হতো।
প্রাচীন প্রস্তর যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল ব্রাহ্মণী।
মধ্য প্রস্তর যুগ:
প্রাচীন প্রস্তর যুগের হাতিয়ার এই সমস্যাগুলি জন্যই পরবর্তীকালে পাথরের
আকারকে আরো কিছুটা ছোট করে দেওয়া হয়। আর সেই সময় থেকেই মধ্য প্রস্তর যুগ শুরু
হয়। মধ্য প্রস্তর যুগকে ক্ষুদ্র প্রস্তর সংস্কৃতি ও বলা হয়।
মধ্য প্রস্তর যুগের হাতিয়ার এর বৈশিষ্ট্য:
- মধ্য প্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার গুলিও প্রাচীন প্রস্তর যুগের মতনই
নির্দিষ্ট আকার ও আয়তনহীন ছিল।
- তবে এই পাথরগুলি ছোট ছিল।
- আর ছোট হওয়ার কারণে এদের ওজন অনেক কম ছিল।
- তবে এই পাথরগুলিকেও পালিশ করা হতো না বলে এদের ধার কম ছিল।
মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষেরা কুকুর কে প্রথম পোষ মানায় এবং তাদের দ্বিতীয়
গৃহপালিত পশু হল ভেড়া।
এই সময়কার মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল পশুচারণ করা।
মধ্য প্রস্তর যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল বীরভানপুর যেটি বর্তমানে
পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত।
নব্য প্রস্তর যুগ
নব্য প্রস্তর যুগে মানুষ শিকার করা ছেড়ে কৃষিকাজ শুরু করে। এই যুগের মানুষের
প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ ও পশুপালন এবং তার আজ এই শো টি সবার প্রথম উৎপাদন করে
সেটি হলো রাগী বা মিলেট।
নব্য প্রস্তর যুগেরের হাতিয়ার এর বৈশিষ্ট্য:
- এই যুগের হাতিয়ার এই নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন ছিল।
- এগুলি ছোট ছিল।
- ওজনে অনেক হালকা ছিল।
- এগুলোকে পালিশ করা হয়েছিল বলে এদের ধরা অনেক বেশি ছিল।
মানুষ সবার প্রথম প্রাচীন প্রস্তর যুগে আগুনকে খুঁজে পেলেও তারা আগুনের
ব্যবহার শুরু করে নব্য প্রস্তর যুগে।
এই যুগের আর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বস্তু হলো কুমোরের চাকা। ঐতিহাসিক রায়
যখন নব্য প্রস্তর যুগে কুমোরের চাকা সন্ধান পান তা থেকে তারা অনুমান করেন এই
সময়কার মানুষ মাটির পাত্র ব্যবহার করতে শেখে। আর পরবর্তীকালে এই সময় কাজে সমস্ত
মাটির পাত্র পাওয়া গেছে সেগুলি ছিলো পোড়ামাটির আর সাধারণত এই পাত্র গুলি দুটি
রঙের হতো লাল এবং কালো। যে সমস্ত মাটির পাত্র গুলিকে আগুনে কম পড়ানো হতো তাদের রং
হতো লাল এবং যে সমস্ত মাটির পাত্র গুলিকে বেশিক্ষণ ধরে আগুনে পোড়ানো হতো তাদের রং
কালো।
নব্য প্রস্তর যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল লঙ্ঘানাজ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন