সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Economics and its types in Bengali | অর্থনীতি ও তার বিভিন্ন প্রকার

অর্থনীতি হলো সমাজবিজ্ঞানের একটি ভাগ। এই বিষয়ে আমরা উৎপাদন, ভোগ, সঞ্চয় প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করে থাকি। Economics শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ oikos যার মানে house বা গৃহ এবং nomus যার মানে custom বা নিয়ম, থেকে এসেছে।
বিভিন্ন অর্থনীতিবিদেরা অর্থনীতির আলাদা আলাদা সংজ্ঞা দিয়েছেন। তারমধ্যে একটি সংজ্ঞা আমরা এখানে উল্লেখ করছি যেটি দিয়েছেন অর্থনীতির জনক এডাম স্মিথ। 
এডাম স্মিথ এর মতে,
অর্থনীতির মৌলিক কাজ হল মানব জাতি ধন-সম্পদের প্রকৃতি ও কারণ অনুসন্ধান করা।
অর্থনীতির আকার এর ভিত্তিতে অর্থনীতিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়
  1. ক্ষুদ্র অর্থনীতি বা Micro Economics
  2. সমষ্টিগত অর্থনীতি বা Macro Economics

ক্ষুদ্র অর্থনীতি বা Micro Economics

অর্থনীতির যে শাখায় একজন ব্যক্তির, গৃহের, সংস্থার সম্পদ বন্টন, বিক্রি ইত্যাদি বিষয় সম্বন্ধে আলোচনা করা হয় তাকে ক্ষুদ্র অর্থনীতি বলা হয়। এই বিভাগে ব্যক্তিদের অর্থনৈতিক ব্যবহার, চাহিদা, জোগানের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়।


সমষ্টিগত অর্থনীতি বা Macro Economics

অর্থনীতির যে শাখায় একটি সমগ্র দেশের চাহিদা যোগান এবং অর্থনৈতিক ব্যবহার সম্বন্ধে আলোচনা বা অনেকগুলি বৃহৎ সংস্থার অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে সমষ্টিগত অর্থনীতি বলা হয়।
এই বিভাগে GDPGNP, বেকারত্ব রেখা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। 


অর্থনীতির প্রকৃতি ভিত্তিতে অর্থনীতিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
  1. পুঁজিবাদী অর্থনীতি (capitalist economy)
  2. সমাজবাদী অর্থনীতি (socialist economy)
  3. মিশ্র অর্থনীতি (mixed economy)

  • পুঁজিবাদী অর্থনীতি: পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে সমস্তত সম্পত্তি ব্যক্তিগত হয় এখানে সরকারের কোন সম্পত্তির মালিকানা থাকে না। কোন জিনিস কতটা পরিমাণে উৎপাদন করা হবে তা ঠিক করাা হয় বাজারে চাহিদার উপর।  USA তে এরকম অর্থনীতি আছে।
পুঁজিবাদী অর্থনীতি সুবিধা-
  1. পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে সমস্ত কিছু ব্যক্তিগত হওয়ায় বাজার সম্পূর্ণভাবে মুক্ত এবং প্রতিযোগিতা অধিক। এই কারণে ক্রেতারা সর্বোচ্চ মানের জিনিস সব থেকে কম মূল্যে পেয়ে যান।
পুঁজিবাদী অর্থনীতি অসুবিধা-
  1. পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে বাজারের প্রতিযোগিতা অত্যাধিক থাকায়, শ্রমিকদের পরিশ্রম অত্যাধিক মাত্রায় হয়। বাজারে টিকে থাকার জন্য।
  • সমাজবাদী অর্থনীতি: সমাজবাদী অর্থনীতিতে সবকিছুই সরকার এর মালিকানাধীন হয় এখানে ব্যক্তিগত মালিকানা বলে কিছু থাকেনা। কোন জিনিস কতটা উৎপাদন করতে হবে তাও সরকার ঠিক করে। চীনে এরকম অর্থনীতি আছে।
সমাজবাদী অর্থনীতি সুবিধা:
  1. এখানে সবকিছু সরকারি হয় কর্মীদের উপর চাপ কম।
সমাজবাদী অর্থনীতির অসুবিধা:
  1. সবকিছুই সরকারি হওয়ায় বাজারে প্রতিযোগিতা কম এই কারণে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ মানের দ্রব্য সব সময় কম মূল্যে পান না।

  • মিশ্র অর্থনীতি: মিশ্র অর্থনীতিতে কিছু জিনিস সরকারি হয় এবং কিছু জিনিস বেসরকারি হয়। মিশ্র অর্থনীতি সব থেকে আধুনিক অর্থনীতি বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের অর্থনীতি প্রচলিত। ভারতে এরকম অর্থনীতি আছে। এই কারণেই আমাদের দেশে একদিকে রেল, rationing system যেমন সরকারি তেমনই অপরদিকে অনেক ব্যাংক বেসরকারি আছে।
  • মিশ্র অর্থনীতিতে একদিকে যেমন পুঁজিবাদী অর্থনীতির সুবিধাগুলি আছে যেমন সবথেকে উচ্চ মানের জিনিস কম দামে পাওয়া যায় তেমনই সমাজবাদী অর্থনীতি সুবিধাও আছে শ্রমিকদের উপর কাজের চাপ এরকম অর্থনীতিতে পুঁজিবাদী অর্থনীতির তুলনায় কম।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Fundamental right in Bengali | মৌলিক অধিকার

Fundamental right বা মৌলিক অধিকার ভারতীয় সংবিধানের part 3 এর article 12 থেকে article 35 এর মধ্যে আছে। মৌলিক অধিকারের ধারণা US Constitution থেকে নেওয়া হয়েছে।  ভারতীয় সংবিধানে বর্তমানে ছয়টি মৌলিক অধিকার আছে। যে গুলি হল, Right to Equality বা সাম্যের অধিকার (article 14 থেকে 18) Right to freedom বাক স্বাধীনতার অধিকার (article 19 থেকে 22) Right against exploitation বা শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার (article 23 থেকে 24) Right to freedom of religion বা ধর্মীয় স্বাধীনতা (article 25 থেকে 28) Cultural and educational rights বা শিক্ষা ও সংস্কৃতির অধিকার (article 29 থেকে 30) Right to constitutional remedies বা সাংবিধানিক প্রতিকারের অধিকার (article 32) 1978 খ্রিস্টাব্দের আগে right to property বা সম্পত্তির অধিকার ও একটি fundamental right বা মৌলিক অধিকার ছিল কিন্তু 1978 সালে 44 তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সম্পত্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার থেকে সরিয়ে legal right বানানো হয় যা বর্তমানে article 300A যে আছে। Right to Equality বা সাম্যের অধিকার (article 14 থেকে 18) -  Article 14 -  Equal

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান

গান্ধীজীর উত্থান ব্রিটেন থেকে ওকালতি পড়ে এসে গান্ধীজী 1898 সালে সাউথ আফ্রিকাতে যান। সেখানে তিনি দাদা আব্দুল্লাহর কেসের জন্য গেলেও সেখানকার নিপীড়িত ভারতীয়দের দেখে তাদের সাহায্য করার জন্য 22 বছর সাউথ আফ্রিকা তে থাকেন। এরমধ্যে গান্ধীজীর প্রতিবাদের দুটি ধারা দেখা যায়। গান্ধীজীর প্রতিবাদের নরমপন্থী ভাগ (1894-1906) দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে গান্ধীজী প্রথমে নরমপন্থী দের মত সরকারকে প্রেয়ার এবং পিটিশন দেওয়া শুরু করে এই আশায় যে যেহেতু আফ্রিকা ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ সেই হিসাবে সেখানকার বসবাসকারী ভারতীয়রা ব্রিটেনের নাগরিক এবং ব্রিটিশ সরকার তাদের দুর্দশা দেখলে তাদের সাহায্য করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।  প্যাসিভ রেজিস্টেন্স বা সত্যাগ্রহী ভাগ (1906-1914) নরমপন্থী ভাবধারায় কাজ না হওয়ায় গান্ধীজি প্যাসিভ রেজিস্টেন্স এর দিকে চলে যায় যাকে তিনি সত্যাগ্রহ বলেন। তিনি প্রথম সত্যাগ্রহ করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা ভারতীয়দের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নিয়ে। এখানে ব্রিটিশ সরকার দ্বারা বলা হয়েছিল যে সমস্ত ভারতীয়রা দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকে তাদেরকে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া একটি কার্ড নিয়ে ঘুরতে হব

ধ্বনি

ধ্বনি কাকে বলে? বাক যন্ত্রের স্বল্পতম প্রয়োগে শব্দের বিশ্লিষ্ট তম অংশকে বলে ধ্বনি। বাংলা ব্যাকরণে 11 টি স্বরধ্বনি এবং 39 টি ব্যঞ্জনধ্বনি আছে। ধ্বনি পরিবর্তন দুইভবে হয়, স্বরধ্বনি ঘটিত পরিবর্তন ও ব্যঞ্জনধ্বনি ঘটিত পরিবর্তন। স্বরধ্বনিঘটিত পরিবর্তন- স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ-  উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা ছন্দের প্রয়োজনে সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ্ণকে  ভেঙে তার মধ্যে স্বরধ্বনি আনার রীতিকে বলা হয় স্বরভক্তি বাা বিপ্রকর্ষ। যেমন - রত্ন > রতন স্বরাগম- উচ্চারণ কে সহজ করতে অথবা উচ্চারণের অপারগতার জন্য শব্দের শুরুতে, মধ্যে বা শেষে স্বরধ্বনি আগমনকে বলা হয় স্বরাগম। স্বরাগমকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। আদি স্বরাগম- শব্দের শুরুতে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- স্কুল > ইস্কুল মধ্য স্বরাগম-  শব্দের মধ্যে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- রত্ন > রতন, ধর্ম > ধরম ইত্যাদি। অন্ত স্বরাগম-  শব্দের শেষে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- বেঞ্চ >বেঞ্চি, ইঞ্চ>ইঞ্চি ইত্যাদি। স্বরলোপ-  উচ্চারণের কোন ত্রুটি বা সুবিধার জন্য শব্দের অন্তর্গত কোন