সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Cell in Bengali | কোষ

জীবদেহের গঠনগত এবং কার্যগত একক হল কোষ। প্রতিটি জীবদেহে এক অথবা অসংখ্য কোষ দিয়ে তৈরি। সবার প্রথম কোষ কে আবিষ্কার করেন রবার্ট হুক 1665 খ্রিস্টাব্দে। এরপরে কোষ নিয়ে আরো অনেক গবেষণা হয় এবং কোষের বিভিন্ন অংশগুলি আবিষ্কৃত হতে থাকে। 1831 খ্রিস্টাব্দে রবার্ট ব্রাউন কোষের মস্তিষ্ক অর্থাৎ নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করেন।
এরপর 1838-1839 খ্রিস্টাব্দ নাগাদ Schleiden Schwan কাদের কোষ তত্ত্ব দেন যেখানে বলা হয়,
  1. সব জীবন্ত জীব কোষ গঠিত হয়।
  2. জীব দেহের গঠনগত এবং কার্যগত একক হল কোষ।
কোষের বিভিন্ন অংশ এবং তাদের কাজ

different part of cell



  • কোষ প্রাচীর - কোষ প্রাচীর সাধারণত উদ্ভিদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। কোষ প্রাচীর cellulose দিয়ে তৈরি। এটি একটি শক্ত আবরণ যা কোষ পর্দার বাইরে অবস্থান করে।
  • কোষ প্রাচীর এর কাজ - কোষ প্রাচীর উদ্ভিদ দেহে দৃঢ়তা প্রদান করে এবং এক কোষ থেকে অন্য কোষে জল এবং খনিজ লবণ পরিবহনে সহায়তা করে।
  • কোষ পর্দা - যে সমস্ত কোষের কোষ প্রাচীর থাকে না বিশেষত প্রাণী কোষের সবথেকে বাইরের অংশ হয় কোষ পর্দা। কোষ পর্দা্দা সজীব, পাতলা, নমনীয় ও অর্ধভেদ্য হয়। উদ্ভিদ কোষের ক্ষেত্রে কোষ পর্দা কোষ প্রাচীরের ভেতরে অবস্থান করে।
  • কোষ পর্দার কাজ - এক কোষ থেকে অন্য কোষে জল, খনিজ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের আদান প্রদানে সহায়তা করে।
  • সাইটোপ্লাজম - কোষ পর্দার ভিতর যে সমস্ত কোষ অঙ্গাণু থাকে নিউক্লিয়াস কে বাদ দিয়ে তাদের সকলকে একসঙ্গ সাইটোপ্লাজম বলে।
  • সাইটোপ্লাজমের কাজ - কোষের মধ্যে থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করে। কোষকে শ্বাস নিতে সাহায্য করে। গ্লুকোজ কে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে।
  • প্রোটোপ্লাজম - সাইটোপ্লাজম + নিউক্লিয়াস। সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াসকে একসঙ্গে প্রোটোপ্লাজম বলা হয়।
  • নিউক্লিয়াস - ঘন, গোলক আকার, জীবন্ত কোষ অঙ্গাণু যার মধ্যে বংশগতির ধারক ও বাহক DNA (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) থাকে, তাকে নিউক্লিয়াস বলে।
  • নিউক্লিয়াস কোষের সমস্ত কাজ নিয়ন্ত্রণ করে বলে নিউক্লিয়াসকে কোষের মস্তিষ্ক ও বলা হয়। যে সমস্ত কোষে সুসঙ্গত নিউক্লিয়াস থাকে তাদের ইউক্যারিওটিক কোষ বলে এবং যে সমস্ত কোষে সুসংগত নিউক্লিয়াস থাকে না তাদের প্রোক্যারিওটিক কোষ বলে।
  • ইউক্যারিওটিক ও প্রোক্যারিওটিক কোষের পার্থক্য -
  • মাইটোকনড্রিয়া - মাইটোকনড্রিয়া তেই ATP (অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট) উৎপন্নন হয়। আর শাসনের সময়় উৎপন্ন হওয়া শক্তি মাইট্রোকন্ডিয়া তেই সঞ্চিত থাকে, তাই একে কোষের শক্তিঘর ও বলা হয়।
  • প্লাস্টিড - প্লাস্টিড কেবলমাত্র উদ্ভিদ কোষে দেখা যায়। প্লাস্টিড বিভিন্ন রংয়ের হয়। তাদের মধ্যে সবুজ প্লাস্টিডকে ক্লোরোপ্লাস্ট বলে। ক্লোরোপ্লাস্ট সালোকসংশ্লেষে সাহায্য করে। সবুজ ছাড়াও সাদা, কমলা ও হলুদ রংয়ের প্লাস্টিড হয়। সাদা প্লাস্টিডকে লিউকোপ্লাস্ট বলে। লিউকোপ্লাস্ট starch, প্রোটিন ও তেল সঞ্চয় করে রাখে।
  • এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম - এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম দুই রকমের হয় smooth endoplasmic reticulum rough endoplasmic reticulumযে সমস্ত এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম এর গায়ে দানার মতো ছোট ছোট বিন্দু থাকে তাদের রাফ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম বলে আর যে সমস্ত এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামে এরকম ছোট ছোট বিন্দু থাকে না তাদের smooth endoplasmic reticulum বলে। এই ছোট ছোট দানার মত বিন্দু গুলিকে রাইবোজোম বলে। 
  • Rough endoplasmic reticulum এর কাজ - Rough endoplasmic reticulum প্রোটিন সংশ্লেষণ সহায়তা করে।
  • Smooth endoplasmic reticulum এর কাজ - Smooth endoplasmic reticulum ফ্যাট ও লিপিড সংশ্লেষণ সহায়তা করে।
  • রাইবোজোম - এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম এর ওপর অবস্থিত ছোট ছোট গোলকাকার বিন্দুু যেগুলি প্রধানত RNA দিয়ে তৈরি, এদের রাইবোজোম বলে।
  • রাইবোজোম এর কাজ - প্রোটিন সংশ্লেষণ সাহায্য করাই রাইবোজোম এর প্রধান কাজ।
  • লাইসোজোম - লাইসোজোম কোষের অপ্রয়োজনীয় বস্তু গুলিকে কোষের বাইরে অপসারিত করতে সাহায্য করে। লাইসোজোম কোষের অপ্রয়োজনীয় বস্তুর ধ্বংস করার জন্য নিজেও ধ্বংস হয়ে যায় । এই জন্য একে আত্মঘাতী থলি বলা হয়।
  • ভ্যাকুওল - ভ্যাকুওল কোষের মধ্যে কিছু ফাঁকা স্থান এগুলি কোষকে দৃঢ়তা প্রদান করে।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Fundamental right in Bengali | মৌলিক অধিকার

Fundamental right বা মৌলিক অধিকার ভারতীয় সংবিধানের part 3 এর article 12 থেকে article 35 এর মধ্যে আছে। মৌলিক অধিকারের ধারণা US Constitution থেকে নেওয়া হয়েছে।  ভারতীয় সংবিধানে বর্তমানে ছয়টি মৌলিক অধিকার আছে। যে গুলি হল, Right to Equality বা সাম্যের অধিকার (article 14 থেকে 18) Right to freedom বাক স্বাধীনতার অধিকার (article 19 থেকে 22) Right against exploitation বা শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার (article 23 থেকে 24) Right to freedom of religion বা ধর্মীয় স্বাধীনতা (article 25 থেকে 28) Cultural and educational rights বা শিক্ষা ও সংস্কৃতির অধিকার (article 29 থেকে 30) Right to constitutional remedies বা সাংবিধানিক প্রতিকারের অধিকার (article 32) 1978 খ্রিস্টাব্দের আগে right to property বা সম্পত্তির অধিকার ও একটি fundamental right বা মৌলিক অধিকার ছিল কিন্তু 1978 সালে 44 তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সম্পত্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার থেকে সরিয়ে legal right বানানো হয় যা বর্তমানে article 300A যে আছে। Right to Equality বা সাম্যের অধিকার (article 14 থেকে 18) -  Article 14 -  Equal

ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজীর উত্থান

গান্ধীজীর উত্থান ব্রিটেন থেকে ওকালতি পড়ে এসে গান্ধীজী 1898 সালে সাউথ আফ্রিকাতে যান। সেখানে তিনি দাদা আব্দুল্লাহর কেসের জন্য গেলেও সেখানকার নিপীড়িত ভারতীয়দের দেখে তাদের সাহায্য করার জন্য 22 বছর সাউথ আফ্রিকা তে থাকেন। এরমধ্যে গান্ধীজীর প্রতিবাদের দুটি ধারা দেখা যায়। গান্ধীজীর প্রতিবাদের নরমপন্থী ভাগ (1894-1906) দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে গান্ধীজী প্রথমে নরমপন্থী দের মত সরকারকে প্রেয়ার এবং পিটিশন দেওয়া শুরু করে এই আশায় যে যেহেতু আফ্রিকা ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ সেই হিসাবে সেখানকার বসবাসকারী ভারতীয়রা ব্রিটেনের নাগরিক এবং ব্রিটিশ সরকার তাদের দুর্দশা দেখলে তাদের সাহায্য করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।  প্যাসিভ রেজিস্টেন্স বা সত্যাগ্রহী ভাগ (1906-1914) নরমপন্থী ভাবধারায় কাজ না হওয়ায় গান্ধীজি প্যাসিভ রেজিস্টেন্স এর দিকে চলে যায় যাকে তিনি সত্যাগ্রহ বলেন। তিনি প্রথম সত্যাগ্রহ করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা ভারতীয়দের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নিয়ে। এখানে ব্রিটিশ সরকার দ্বারা বলা হয়েছিল যে সমস্ত ভারতীয়রা দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকে তাদেরকে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া একটি কার্ড নিয়ে ঘুরতে হব

ধ্বনি

ধ্বনি কাকে বলে? বাক যন্ত্রের স্বল্পতম প্রয়োগে শব্দের বিশ্লিষ্ট তম অংশকে বলে ধ্বনি। বাংলা ব্যাকরণে 11 টি স্বরধ্বনি এবং 39 টি ব্যঞ্জনধ্বনি আছে। ধ্বনি পরিবর্তন দুইভবে হয়, স্বরধ্বনি ঘটিত পরিবর্তন ও ব্যঞ্জনধ্বনি ঘটিত পরিবর্তন। স্বরধ্বনিঘটিত পরিবর্তন- স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ-  উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা ছন্দের প্রয়োজনে সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ্ণকে  ভেঙে তার মধ্যে স্বরধ্বনি আনার রীতিকে বলা হয় স্বরভক্তি বাা বিপ্রকর্ষ। যেমন - রত্ন > রতন স্বরাগম- উচ্চারণ কে সহজ করতে অথবা উচ্চারণের অপারগতার জন্য শব্দের শুরুতে, মধ্যে বা শেষে স্বরধ্বনি আগমনকে বলা হয় স্বরাগম। স্বরাগমকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। আদি স্বরাগম- শব্দের শুরুতে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- স্কুল > ইস্কুল মধ্য স্বরাগম-  শব্দের মধ্যে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- রত্ন > রতন, ধর্ম > ধরম ইত্যাদি। অন্ত স্বরাগম-  শব্দের শেষে স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন- বেঞ্চ >বেঞ্চি, ইঞ্চ>ইঞ্চি ইত্যাদি। স্বরলোপ-  উচ্চারণের কোন ত্রুটি বা সুবিধার জন্য শব্দের অন্তর্গত কোন